ইনডোর সাবস্টেশনের বিভিন্ন অংশের কার্যাবলি

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় – ইনডোর সাবস্টেশনের বিভিন্ন অংশের কার্যাবলি।যা “ সাবস্টেশনের ব্যবহার এবং কার্যক্রম” অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।

ইনডোর সাবস্টেশনের বিভিন্ন অংশের কার্যাবলি

 

ইনডোর সাবস্টেশনের বিভিন্ন অংশের কার্যাবলি

 

ইনডোর সাবস্টেশনের বিভিন্ন অংশের কার্যাবলিঃ

(১) বাসবার (Busbar):বাসবার অ্যালুমিনিয়াম বা কপারের তৈরি আয়তাকার দণ্ডবিশেষ, যা সর্বদা স্থির ভোস্টেজে (Constant voltage) কাজ করে। সাবস্টেশনের ইনকামিং এবং আউটগোয়িং লাইনসমূহ বাসবারের সাহায্যেই সংযুক্ত থাকে। 

(২) লাইটনিং অ্যারেস্টার (Lightning Arrester) : সাবস্টেশনের বিভিন্ন সরঞ্জামাদিকে সার্জজনিত ওভার ভোল্টেজের ক্ষতি হতে রক্ষা করার জন্য লাইটনিং অ্যারেস্টার ব্যবহার করা হয়। 

(৩) আইসোলেটর (Isolator) : সাবস্টেশনের বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট বিশেষ করে ট্রান্সফর্মারকে নো-লোড অবস্থায় বা খুব সামান্য লোড অবস্থায় লাইন হতে বিচ্ছিন্ন করার কাজে আইসোলেটর ব্যবহার করা হয়। 

(৪) অয়েল সার্কিট ব্রেকার (Oil Circuit Breaker) : এটি এমন একটি সুইচিং ডিভাইস, যা দ্বারা বর্তনীকে স্বাভাবিক এবং অস্বাভাবিক উভয় অবস্থায় খোলা বা বন্ধ করা যায়। অর্থাৎ সার্কিট ব্রেকার পূর্ণ লোড অবস্থায়, অথবা ফন্ট অবস্থায়ও বর্তনীকে লাইন হতে বিচ্ছিন্ন করতে পারে। ফন্ট অবস্থায় এর অপারেশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালিত হয়ে থাকে।

(৫) ইনট্রুমেন্ট ট্রান্সফর্মার (Instrument Transformer) : ইনস্ট্রুমেন্ট ট্রান্সফর্মার প্রধানত দুই প্রকার।যথা :

(ক) কারেন্ট ট্রান্সফর্মার (সিটি) : হাই ভোল্টেজ লাইনের উচ্চ মানের কারেন্টকে লো-রেঞ্জের অ্যামিটারের সাহায্যে পরিমাপ করার জন্য কারেন্ট ট্রান্সফরমার বা সিটি ব্যবহার করা হয়। 

(খ) পটেনশিয়াল ট্রান্সফর্মার (পিটি) : হাই ভোল্টেজকে লো-রেঞ্জের ভোল্টমিটার দ্বারা পরিমাপ করার জন্য পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার ব্যবহার করা হয়।

(৬) পাওয়ার ট্রান্সফর্মার (Power Transformer) : ইনডোর সাবস্টেশনে ব্যবহৃত পাওয়ার ট্রান্সফর্মারটি স্পেস ডাউন প্রকৃতির। এর সাহায্যে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী লো-ভোল্টেজে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

(৭) মিটারিং এবং ইন্ডিকেটিং ইনট্রুমেন্ট : সাবস্টেশনের বিভিন্ন পাঠ গ্রহণের জন্য বিভিন্ন প্রকার ইন্ডিকেটিং ইনস্ট্রুমেন্ট, যেমন- অ্যামিটার, ভোল্টমিটার, ওয়াটমিটার, এনার্জিমিটার প্রভৃতি ব্যবহার করা হয়।

(৮) ইনসুলেটর : সাবস্টেশনে ইনসুলেটর দুটি কাজে ব্যবহার করা হয় : প্রথমত, এটি কন্ডাক্টরকে সাপোর্ট প্রদান করে; দ্বিতীয়ত, কন্ডাক্টরের ভিতর দিয়ে কারেন্ট প্রবাহ নিশ্চিত করে। ইনসুলেটর সাধারণত পোরসিলিনের তৈরি হয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রকার ইনসুলেটরের মধ্যে পিন টাইপ, সাসপেনশন টাইপ এবং পোস্ট টাইপ ইনসুলেটর সাবস্টেশনে বহুল ব্যবহৃত হয়।

 

ইনডোর সাবস্টেশনের বিভিন্ন অংশের কার্যাবলি

 

(৯) বিবিধ ইকুইপমেন্ট (Miscellaneous Equipment) : 

(ক) ফিউজ : প্রোটেক্টিভ ডিভাইস (ড্রপ আউট ফিউজ, কার্টিজ ফিউজ, এক্সপালশন ফিউজ ইত্যাদি)।

(খ) কেরিয়ার কারেন্ট ইকুইপমেন্ট : নিজস্ব জরুরি যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা (টেলিফোন মাধ্যমে)। 

(গ) সাবস্টেশনের সাহায্যকারী যন্ত্রাংশের সরবরাহ : সাহায্যকারী যন্ত্রাংশের সরবরাহ হিসেবে সাধারণ ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। 

(ঘ) ডিসি সাপ্লাই রিলে ও বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হয়।

(ঙ) অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র : ফায়ার এক্সটিঙ্গুইশার, পানি, বালু ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।

(১০) প্যানেল বোর্ড (Pannel Board) : বিভিন্ন প্রকার মিটার, যেমন- অ্যামিটার, ভোল্টমিটার, এনার্জিমিটার প্রভৃতি প্যানেল বোর্ডে সংযোজিত থাকে। 

(১১) কন্ট্রোল ডেস্ক (Controll Desk) : সাবস্টেশনের বিভিন্ন অংশকে আলাদাভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য কন্ট্রোল ডেস্ক ব্যবহার করা হয়।

 

ইনডোর সাবস্টেশনের বিভিন্ন অংশের কার্যাবলি

 

(১২) ওয়ার্কশপ (Workshop) : ওয়ার্কশপে সাবস্টেশনের বিভিন্ন ইকুইপমেন্টের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্য সম্পন্ন করা হয়। 

(১৩) বাতাস প্রবাহের ব্যবস্থা : ট্রান্সফর্মার, বিভিন্ন তাপ উৎপাদনকারী যন্ত্র ও সুইচগিয়ারে বাতাস প্রবাহের ব্যবস্থা করা হয়। 

(১৪) আর্থিং সুইচ : আর্থিং সুইচ এর মাধ্যমে লাইনে কোনো অতিরিক্ত চার্জ থাকলে তা ডিসচার্জ করা হয়। এতে লাইনম্যান নিরাপদে কাজ করতে পারে।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment