বিভিন্ন স্টোরেজ মিডিয়ার বৈশিষ্ট্য | অধ্যায়-৮ | ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় – বিভিন্ন স্টোরেজ মিডিয়ার বৈশিষ্ট্য তালিকা  যা অধ্যায়-৮ এর ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এ অন্তর্ভুক্ত। এটি চার বছর মেয়াদি কোর্সের আলোকে লেখা হয়েছে। ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের বিভিন্ন ইংরেজি বই অনুসরণ করেই রচনা করা হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ের যে-কোন বই সম্পূর্ণরূপে বাংলা ভাষায় রচনা করা সম্ভব নয়। এজন্যে কিছু কিছু ইংরেজি শব্দকে বাংলায় অনুবাদ করা হয়নি। ফলে ছাত্রছাত্রীদের হয়ত কিছুটা অসুবিধা হতে পারে।

বিভিন্ন স্টোরেজ মিডিয়ার বৈশিষ্ট্য

কম্পিউটার (Computer) এর যে সমস্ত মেমোরি ডিভাইস (Memory Device)-কে ডাটা জমা (Data Store) করার জন্যে ধ্যবহার করা হয়, তাদেরকেই ফিজিক্যাল স্টোরেজ মিডিয়া (Physical Storage Media) বলা হয়। কম্পিউটার সিস্টেমে বিভিন্ন প্রকার ডাটা স্টোরেজ মিডিয়া ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সাধারণত এ সমস্ত মিডিয়াম (Medium)-সমূহকে তাতে ডাটা অ্যাক্সেস (Access)-এর স্পীড (Speed), প্রতি ইউনিট (Unit)-এর জন্য মিডিয়ামের মূল্য (Cost) ও মিডিয়ামের রিলায়াবিলিটি (Reliability)- এর উপর ভিত্তি করে শ্রেণিবিভাগ করা হয়ে থাকে। এ আলোকে সহজলভ্য মিডিয়াম (Medium)-গুলোর শ্রেণিবিভাগ ও বৈশিষ্ট্য নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ

১। ক্যাশ মেমোরি (Cache Memory): এটি সবচেয়ে বেশি দ্রুতগামী (Fast) এবং মূল্যবান স্টোরেজ মিডিয়াম (Costly Storage Medium)। তবে তুলনামূলকভাবে এর ধারণ ক্ষমতা (Capacity) বেশ কম হয়ে থাকে। কারণ, ধারণ ক্ষমতা (Capacity), বাড়াতে গেলে সিস্টেমের হার্ডওয়্যার (Hardware) এর মূল্য (Cost) অত্যন্ত বেড়ে যায়। সাধারণত অপারেটিং সিস্টেম (Operating System) দ্বারা একে ম্যানেজ (Manage) করা হয়। সাধারণত ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (Database Management System) এর ম্যানেজমেন্ট (Management) নিয়ে আলোচনা করা হয় না।

 

স্টোরেজ অ্যান্ড ফাইল স্ট্রাকচার

 

২। মেইন মেমোরি (Main Mamory): এটি কম্পিউটারের প্রধান মেমোরি (Memory)। যে সমস্ত ডাটা এর উপর কার্য সম্পন্ন করা হবে, তাদেরকে অবশ্যই মেইন মেমোরিতে উদ্ধার করতে হবে। যদিও মেইন মেমোরি অনেক মেগাবাইট ডাটা ধারণ করতে পারে, তবুও সমগ্র ডাটাবেস ধারণ করার জন্যে এটি অত্যন্ত ক্ষুদ্র। কারণ সমগ্র ডাটাবেস এর তুলনায় মেইন মেমোরি এর ধারণ ক্ষমতা অত্যন্ত কম। স্পীড এবং মূল্য এর দিক থেকে ক্যাশ মেমোরি এর ঠিক পরেই মেইন মেমোরির অবস্থান। অর্থাৎ এটি একটি ব্যয়বহুল স্টোরেজ মিডিয়াম (Storage Medium)। সাধারণত পাওয়ার অকৃতকার্য (Power Failure) হলে মেইন মেমোরির ডাটা হারিয়ে যায়।

৩। ফ্ল্যাশ মেমোরি (Flash Memory): একে ইলেকট্রিক্যালি ইরেজাবল প্রোগ্রাম্যাবল রিড অনলি মেমোরি (Electrically Erasable Programmable Red-Only Memory) বা (EEPROM) বলে। মেইন মেমোরির সাথে ফ্ল্যাশ মেমোরি (Flash memory) এর পার্থক্য হল পাওয়ার অকৃতকার্য (Power Failure)-এর পরেও এতে ডাটা জমা থাকে। তাছাড়া এটি হতে ডাটা অতিদ্রুত পড়া (Read) যায়।

তবে সরাসরি এতে ডাটা লেখা (Write) যায় না। পূর্বে লিখিত (Written) ফ্ল্যাশ মেমোরিতে পুনরায় লিখতে (Overwrite) চাইলে তার সমস্ত লোকেশন (Location) কে একই সাথে মুছে (Erase) ফেলতে হবে। অর্থাৎ সমস্ত মেমোরি লোকেশন (Memory Location) কে মুছার (Erase) পরই তাতে ডাটা (Data) লেখা সম্ভব হবে। এমনকি এ ধরনের মেমোরি ডিভাইস (Memory Device) এর আংশিক লোকেশন (Location) খালি থাকা সত্ত্বেও তাতে ডাটা লেখা (Data Write) সম্ভব নয়। ফ্ল্যাশ মেমোরি (Flash Memory) তে ডাটা লিখতে সময় বেশি লাগে।

 

 

৪। ম্যাগনেটিক ডিস্ক স্টোরেজ (Manetic Disk Storage): একে কম্পিউটার (Computer) এর প্রাথমিক স্টোরেজ মিডিয়াম (Storage Medium) হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ম্যাগনেটিক ডিস্ক স্টোরেজ (Magnetic Disk Storage) বহুল ব্যবহৃত এবং দীর্ঘস্থায়ী একটি স্টোরেজ মিডিয়াম। ম্যাগনেটিক ডিস্ক (Megnetic Disk) এ স্থায়ীভাবে ডাটা জমা (Store) করা সম্ভব হয়। পাওয়ার অকৃতকার্য (Tailure) হলেও এতে ডাটা নষ্ট হয় না। দাম (Cost) পারফরম্যান্স (Performance) ও স্পীড (Speed) এর দিক থেকে ম্যাগনেটিক ডিস্ক স্টোরেজ মিডিয়ামটি অত্যন্ত সুবিধাজনক। সাধারণত ডিস্ক স্টোরেজ (Disk Storage) কে ডাইরেক্ট অ্যাক্সেস স্টোরেজ (Direct Access Storage) বলা হয়।

কারণ যে কোন পদ্ধতি (Order) তে ডিস্ক (Disk) হতে ডাটা পড়া (Read) যায়। এ স্টোরেজ মিডিয়ামের ধারণ ক্ষমতা সর্বাধিক হয়ে থাকে। ম্যাগনেটিক ডিস্ক স্টোরেজ মিডিয়াম নানা আকৃতির এবং নানা ধরণের ধারণক্ষমতা (Capacity) এর পাওয়া যায়। তবে সমস্ত ডাটাবেস (Database) কে এ মিডিয়াম (Medium) এ জমা করা হয়। পরে ডাটাবেসে প্রবেশ (Access) করার প্রয়োজন হলে তাকে মেইন মেমোরি (Main Memory)-তে স্থানান্তর (Move) করানো হয়।

 

স্টোরেজ অ্যান্ড ফাইল স্ট্রাকচার

 

৫। অপটিক্যাল স্টোরেজ (Optical Storage) : যদি কোন মিডিয়ামে অপটিক্যালি (Optically) ডাটা জমা (Store) ও পড়া (Read) হয়, তবে তাকে অপটিক্যাল স্টোরেজ (Optical Storage) বলা হয়। অপটিক্যাল স্টোরেজ এর বহুল ব্যবহৃত একটি রূপ (Form) হল কমপ্যাক্ট ডিস্ক রিড অনলি মেমোরি (Compact Disk Read Only Memory) বা (CD-ROM)।

এতে অপটিক্যালি (Optically) ডাটা জমা করা যায় এবং পরবর্তীতে লেজার (LASER) বীম (Beam) দ্বারা পড়া (Read) হয়। সিডি-রম (CD-ROM) এ একবার ডাটা জম্য করা হলে তা আর মুছা (Erase) যায় না। ফলে তাতে ডাটা পুনরায় লেখা (Rewrite) আর সম্ভব হয় না। অপটিক্যাল স্টোরেজ (Optical Storage) এর অপর একটি রূপ হল রাইট ওয়ান্স (Write Once) রিড ম্যানি (Read Many) বা Worm। এতেও ডাটা একবার লেখা হলে আর পূণরায় লেখা (Rewrite) সম্ভব হয় না। অবশ্য বর্তমানে রিরাইট্যাবল (Rewritable) কিছু সিডি-রম (CD-ROM) পাওয়া যায়।

ম্যাগনেটিক অপটিক্যাল স্টোরেজ ডিভাইস (Magnetic Optical Storage Device) নামে অন্য একটি কম্বাইন্ড স্টোরেজ মিডিয়াম (Combined Storage Medium) আছে, যাতে ডাটা মুছা (Erase) এবং পুনরায় লেখা (Rewrite) সম্ভব। এটি হতে ম্যাগনেটিক্যালি ইনকোডেড ডাটা (Magnetical Encoded Data) কে অপটিক্যালি (Optically) রিড (Read) করা যায়।
তাত্ত্বিক অংশ

৬। ম্যাগনেটিক টেপ স্টোরেজ (Magnetic Tape Storage) : টেপ স্টোরেজ (Tape Storage) কে মূল ডাটা ব্যাকআপ (Backup) ও আর্কাইভ্যাল (Archival) এর উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। ম্যাগনেটিক টেপ (Magnetic tape) অন্যান্য স্টোরেজ ডিভাইস (Storage Device) এর তুলনায় খুবই সস্তা। কিন্তু তাতে ডাটা অ্যাক্সেস টাইম (Data Access Time) খুবই বেশি লাগে। একে সিকুয়েনশিয়াল অ্যাক্সেস স্টোরেজ (Sequential Access Storage) ও বলা হয়। কারণ এটি হতে শুধুমাত্র সিকুয়েনশিয়ালী (Sequentially) ডাটা পড়া (Read) ও লেখা (Write) সম্ভব। এর স্থায়িত্বকাল অনেক বেশি হয়ে থাকে। টেপ (Tape) এর ধারণক্ষমতা (Capacity) অত্যন্ত বেশি এবং তাকে টেপ ড্রাইভ (Tape Drive) হতে বের করা যায়। বিভিন্ন স্টোরেজ মিডিয়া (Storage Media) এর স্পীড (Speed) এবং মূল্য (Cost) অনুসারে নিম্নে তাদের হায়ারার্কিক্যাল (Hierarchical) চিত্র দেয়া হলঃ

উপরের চিত্র হতে বুঝা যায় যে, উপরের লেভেলের দিকে গেলে storage এর মূল্য বৃদ্ধি পায় কিন্তু speed অনেক বেশী পাওয়া যায়। অর্থ্যাৎ প্রতি bit এর জন্য খরচ বেড়ে যায়। অপরদিকে নীচের দিকে গেলে প্রতিবিটের খরচ কমে যায়, কিন্তু speed হ্রাস পেতে থাকে।
চিত্রের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা আয় যে, উপরের দিকে যে storage মিডিয়াগুলো আছে সেগুলো সেমিকন্ডাক্টর storage device। যেমন র‍্যাম ও মেইন মেমরি এগুলোকে primary storage বলে। অপর পক্ষে নীচের level-এর storage গুলোকে secondary storage বলে। যেমন- ম্যাগনেটিক ডিস্ক ও ম্যাগনেটিক টেপ storage I

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment