আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় – ডাটাবেস সিস্টেমের মূলনীতির সূচনা যা অধ্যায়-১ এর ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এ অন্তর্ভুক্ত। এটি চার বছর মেয়াদি কোর্সের আলোকে লেখা হয়েছে। ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের বিভিন্ন ইংরেজি বই অনুসরণ করেই রচনা করা হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ের যে-কোন বই সম্পূর্ণরূপে বাংলা ভাষায় রচনা করা সম্ভব নয়। এজন্যে কিছু কিছু ইংরেজি শব্দকে বাংলায় অনুবাদ করা হয়নি। ফলে ছাত্রছাত্রীদের হয়ত কিছুটা অসুবিধা হতে পারে।
ডাটাবেস সিস্টেমের মূলনীতির সূচনা
সূচনা
ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (Database management system) হল পরস্পর সম্পর্কযুক্ত (Interrelated) কতকগুলো ডাটা (Data) এবং ঐ সমস্ত ডাটাতে প্রবেশ (Access) করার জন্য একসেট প্রোগ্রাম (A set of program) এর সংগ্রহ (Collection) বা সমষ্টি। এক্ষেত্রে ডাটার সংগ্রহ বা সমষ্টিকে বলা হয় ডাটাবেস (Database)। ডাটাবেস মূলতঃ কোন প্রতিষ্ঠানের বা কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর তথ্য (Information) ধারণ করে থাকে।
ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমকে সংক্ষেপে DBMS (ডিবিএমএস) বলা হয়। DBMS এর প্রধান লক্ষ্য হল- এমন একটি পরিবেশ (Environment) সরবরাহ করা, যাতে ডাটাবেসে সুবিধাজনকভাবে ও দক্ষতার সাথে প্রচুর পরিমাণ তথ্য জমা (Store) ও উদ্ধারকার্য (Retrieve) সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। কেননা ডাটাবেসকে মূলতঃ বৃহদায়তনের ডাটা (Large volume of data) ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যেই তৈরি বা ডিজাইন করা হয়ে থাকে।
ডাটা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে স্টোরেজ ডিভাইসের গঠন (Structure) এবং তথ্য ম্যানিপুলেশন (Manipulation) এর মেকানিজম (Mechanism) সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা অত্যাবশ্যক। তাছাড়াও, ডাটাবেস সিস্টেমকে অবশ্যই তথ্যের নিরাপত্তা সরবরাহ করতে হবে। কারণ ডাটা যে কোন প্রতিষ্ঠানের জন্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সিস্টেম ক্র্যাশ বা অন্য কোন কারণে যাতে ডাটা হারিয়ে না যায়, সে ব্যাপারে অবশ্যই ডাটাবেসের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে ডাটাবেস সিস্টেমের মূলনীতিসমূহ (Basic principle of database system) আলোচনা করা হয়েছে।
ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য এ অধ্যায়ে আলোচ্য বিষয়সমূহ অত্যন্ত জরুরি। অর্থাৎ বইয়ের অন্যান্য অধ্যায়ের বিষয়গুলো জানার সুবিধার্থে এ অধ্যায় জানার প্রয়োজন রয়েছে। এ অধ্যায়ে ডাটাবেস সম্পর্কে মৌলিক ধারণা (Basic concept) লাভের পরই একজন শিক্ষার্থীর নিকট সমগ্র ডাটাবেস সম্পর্কে ধারণা লাভের স্পৃহা সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত পাঠ্যক্রমের প্রথম অধ্যায়ে ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সম্পর্কিত অত্যন্ত প্রাথমিক বিষয়সমূহ সংযোজিত হয়েছে, যেমন- ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর সংজ্ঞা, উদ্দেশ্য, সুবিধা-অসুবিধা ইত্যাদি।
ডাটা মডেল (Data model) হল ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মূল ভিত্তি। ভিত্তি ছাড়া যেমন কোন কিছু চিন্তা করা যায় না, ঠিক তেমনি ডাটা মডেল ছাড়া ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমকে চিন্তা করা যায় না। উদাহরণস্বরূপ, একটি দালানের কথা যদি আমরা চিন্তা করি তবে দেখা যাবে, এর ভিত্তি (Foundation) বা আন্ডারলেয়িং (Underlaying) হল আসল বস্তু, যার উপর সম্পূর্ণ দালানটি দাঁড়িয়ে আছে। ভিত্তি না থাকলে এটি দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না। অনুরূপভাবে বলা যায় যে, ডাটা মডেল না থাকলে ডাটাবেসের অন্যান্য অংশগুলো অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে। কারণ এটি সম্পূর্ণরূপে ডাটা মডেলের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। অতএব, ডাটা মডেলের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
একজন ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট শিক্ষার্থীর জন্যে ডাটা মডেলের গুরুত্ব সর্বাধিক। কারণ, ডাটা মডেল এর উপর সার্বিক জ্ঞান অর্জন ব্যতিত তিনি ডাটাবেস ম্যানেজমেন্টের অন্যান্য প্রয়োজনীয় ও উচ্চতর বিষয়গুলো অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন না। এজন্য অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে শিক্ষার্থীকে এ অধ্যায় পাঠ করে ডাটা মডেল সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
আরও দেখুনঃ