আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-সিঙ্গেল ফেইজ প্রিভেন্ট।
সিঙ্গেল ফেইজ প্রিভেন্টার
ভূমিকা (Introduction) :
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট। যারা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কে জানেন তারা নিশ্চই অবগত আছেন যে, প্রি-ফেইজ মোটর কোনো কারণে একটা ফেইজ ফেইলর হলে কী হয়। এ অবস্থায় মোটর অনিয়মিত ঘুরতে থাকে। তখন প্রচুর কারেন্ট প্রবাহিত হবার সময় মোটরের কয়েল পুড়ে যেতে পারে।
তাই সমস্ত থ্রি-ফেইজ মোটরের ব্যাটারি বর্তমানে সিঙ্গেল ফেইজ প্রিভেন্টারের ব্যবস্থা রাখা হয়। এর ফলে যে-কোনো একটা ফেইজ ফেইলর হলেই সবকটা সাপ্লাই বন্ধ হয়ে যাবে। বেশিরভাগই মোটর মেকানিক্যাল রিলে ও কয়েল দ্বারা পরিচালিত। এখানে একটি ইলেকট্রনিক্স সিঙ্গেল ফেইজ প্রিভেন্টার সার্কিট নিয়ে কাজ করা হবে।
প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ (Essential parts ) :
১। ট্রান্সফরমার (Transformer, X, X2 X3-0-6V-400mA )- ৩টি
২। ডায়োড (Diode D1 D2. D, D, D, IN 4007)- ৫টি
৩। রেজিস্টর (Resistor-4702)- ১ টি
৪। ট্রানজিস্টর (Transistor-SL 100 /AC 187 )- ১টি
৫। রিলে (Relay-9V, 300 SPST)- ১ টি
৬। রিলে (Relay-12V, 40052.20A)- ১ টি
৭। মোটর (Motor)- ১টি
৮। আইসি (IC-7410L )- ১টি
৯। ক্যাপাসিটর (Capacitor)- ৩টি
১০। ল্যাম্প (Lamp LR, LY, LB 15W, 220V)- ৩টি
১১। ফিউজ (Fuse) ১২। পিসিবি (PCB)-৩টি
১৩। ট্রেইনার বোর্ড (Trainer board)- ১টি
১৪। মাল্টিমিটার (Multimeter)- ১টি
১৫। সোল্ডারিং আয়রন (Soldering iron )- ১টি
১৬। সোল্ডারিং লেড (Soldering lead)- প্রয়োজনমতো
১৭। কানেকটিং ওয়্যার (Connecting wire)-প্রয়োজনমতো
সার্কিট বর্ণনা (Circuit description):
এ সার্কিট তিনটি স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার (X, X, X,) রয়েছে। যখন থ্রি-ফেইজই থাকে, তখন X X ও X চালু থাGেAB. C তিনটি পয়েন্টেই 6V থাকে । কোনো কারণে একটি ফেইজ ফেইলর হলে X X বা X, বন্ধ হয় ফলে A, B ও C পয়েন্টে সাপ্লাই বন্ধ হয়ে যায়।
IC 7410 হল তিন ইনপুট NAND গেইট আইসি। এর তিনটি ইনপুট হলো 1, 2 ও 13 নং পিন এবং আউটপুট হলো 12 নং পিন। যখন A, B ও C তে লজিক ‘হাই’ (1) থাকে। তখন 12 নং পিনে ‘লো’ (O) থাকে। কোনো কারণে একটা ইনপুট ‘লো’ হলে তখন আউটপুট ‘হাই’ হয়ে যায়।
ফলে রিলে RL ও RI, চালু হয় এবং ল্যাম্প (Li) জ্বলে উঠে। মজার কথা হলো রিলে RL, চালু হলেই তিনটি ফেইজ একার ব্রেক হয়ে যায় এবং ট্রান্সফরমার X X ও X, তিনটিই বন্ধ হয়ে যায়, এতে মোটর বন্ধ হয়ে যায়। তখন A, B ও C তোলো’ হয় এবং বিলে। RI ও RL2 চালু হয়ে থাকে।
এখন + 5V সাপ্লাই OFF করে দিলেই রিলে OFF হয়ে যায় ও মোটর ON হয়ে যায়। এরপর +5V সাপ্লাই ON করে দিলেই রিলে ON হবে না, কারণ A, B ও C তে ‘হাই’ হয়ে আছে। এ সার্কিটের তিনটি ল্যাম্প (LR, LY, LB) দ্বারা বুঝা যায় যে, কোন ফেইজটা গেল।
সার্কিট ডায়াগ্রাম (Circuit diagram):
কার্যপ্রণালি (Working procedure):
১। একটি সিঙ্গেল ফেইজ প্রিভেন্টারের সার্কিট ডায়াগ্রাম সংগ্রহ করি।
২। সার্কিট ডায়াগ্রাম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় মালামাল সংগ্রহ করি।
৩। সার্কিট ডায়াগ্রাম অনুযায়ী ট্রেইনার বোর্ডে সার্কিট সাজাই।
৪। সার্কিটের সাথে রিলেগুলো ভালোভাবে সংযোগ প্রদান করি।
৫। সার্কিটের সাথে মোটর সংযোগ প্রদান করি।
৬। সার্কিটে প্রয়োজনীয় পাওয়ার সরবরাহ করে সার্কিট ON করার ব্যবস্থা গ্রহণ করি ।
৭। থ্রি-ফেইজের যে-কোনো একটি ফেইজ ফেইলর করে সার্কিটটি পর্যবেক্ষণ করে দেখি।
৮। সার্কিটটি যদি সঠিকভাবে কাজ করে তাহলে সার্কিট ডায়াগ্রাম অনুযায়ী সার্কিট লে-আউট তৈরি করি ।
৯। সার্কিট লে-আউট অনুযায়ী PCB তৈরির প্রক্রিয়ার PCB তৈরি করি।
১০। PCB-এর সমস্ত যন্ত্রাংশ ভালোভাবে সোল্ডারিং করি।
১১। PCB-এর সার্কিট ভালোভাবে পরীক্ষা করে থ্রি-ফেইজ মোটরের ব্যবহারের উপযোগী করে PCB টি একটি কভার বক্সে বন্দি করি।
যাচাই প্রণালি (Testing procedure):
১। সার্কিটের পাওয়ার সরবরাহ ভালো করে যাচাই করি।
২। মিটারের সাহায্যে ট্রান্সফরমারের ভালোমন্দ যাচাই করি।
৩। মিটারের সাহায্যে ডায়োডগুলোর ভালোমন্দ যাচাই করি।
৪। মিটারের সাহায্যে রেজিস্টরটির ভালোমন্দ পরীক্ষা করি ।
৫। মিটারের সাহায্যে ট্রানজিস্টরটির ভালোমন্দ পরীক্ষা করি।
৬। মিটারের সাহায্যে রিলেগুলোর ভালোমন্দ পরীক্ষা করি।
৭। PCB-এর সমস্ত সোল্ডারিং ভালোভাবে পরীক্ষা করি।
৮। PCB-এর কপার সংযোগ ঠিক আছে কি না যাচাই করি।
৯। সার্কিটের কোন অংশে শর্ট আছে কি না মিটারের সাহায্যে যাচাই করি।

রিপোর্ট তৈরিকরণ (Prepare of report):
এ প্রজেক্টটি সম্পন্ন করার মাধ্যমে একটি সিঙ্গেল ফেইজ প্রিভেন্টার সার্কিট সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করা হয়েছে। এখানে একটি সার্কিট নির্বাচন করে প্রয়োজনীয় মালামাল সংগ্রহের মাধ্যমে একটি PCB তৈরি করা হয়েছে। এ ধরনের প্রশ্নের ব্যক্তিগত ব্যবহারিক কাজ ও বাজারজাতকরণের কাজে আসে। এ প্রজেক্টটি সম্পন্ন করার ফলে ছাত্রজীবন ও কর্মজীবনে অনেক উপকারে আসবে।
আরও দেখুনঃ