সকল যন্ত্রাংশ স্থাপন

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-সকল যন্ত্রাংশ স্থাপন ।যা একটি সোলার পাওয়ার সিস্টেম প্রস্তুত এর অন্তর্ভুক্ত।

সকল যন্ত্রাংশ স্থাপন

 

সকল যন্ত্রাংশ স্থাপন

 

প্যানেল স্থাপন স্থান/জায়গা নির্বাচন :

সৌর প্যানেল স্থাপন করার সময় নিম্নলিখিত বিষয়ের উপর লক্ষ রাখতে হবে-

(ক) আলোর পর্যাপ্ততাঃ

দিনের অধিকাংশ সময় বা সারাদিন যে স্থানে সূর্যের আলো থাকে সে স্থানে প্যানেল স্থাপন করতে হবে। অর্থাৎ যেখানে উন্মুক্তভাবে সূর্যের আলো পড়ে সেখানেই প্যানেল স্থাপন করতে হবে।

(খ) কৌণিক স্থাপনঃ

সৌর প্যানেলকে “দক্ষিণমুখী” করে ভূমির সাথে “২৩ ডিগ্রি কোণে হেলানোভাবে স্থাপন করতে হয়। কারণ সূর্য পূর্বদিক থেকে উদয় হয়ে দক্ষিণ দিক হয়ে পশ্চিম দিকে অস্ত যায়। তাই দক্ষিণ দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশিরভাগ সময় সূর্যের আলো পাওয়া যায়।

তারই সৌর প্যানেল “দক্ষিণ দিকে” মুখ করে লাগানো হয়। উল্লেখ্য যে, কৌণিক পরিমাপ বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে (বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালে সূর্যের আলো খাড়াভাবে পড়ে এবং শীতকালে তীর্যকভাবে পড়ে)। সেজন্য শীতকালে প্যানেলকে একটু খাড়াভাবে অর্থাৎ ৪৫ ডিগ্রি কোণে এবং গ্রীষ্মকালে প্যানেলকে একটু হেলানোভাবে অর্থাৎ ১৫-২০ ডিগ্রি কোণে স্থাপন করা যুক্তিযুক্ত।

কিন্তু ঋতু পরিবর্তনের সাথে প্যানেলকে বিভিন্ন কোণে স্থাপন করা কষ্টকর ও ঝামেলাপূর্ণ কাজ। এজন্য বিশেষজ্ঞগণ জানুয়ারি-ডিসেম্বর পর্যন্ত কৌণিক বিশ্লেষণ করে একটি গড় কৌণিক নির্ধারণ করছেন। সে অবস্থায় প্যানেল স্থাপন করলে গড়ে বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। এ কোণিক পরিমাণ হচ্ছে “২৩ ডিগ্রি”। তবে সাধারণভাবে নিচের সূত্রটি অনুসরণ করা যেতে পারে।
সর্বোচ্চ বার্ষিক শক্তি পেতে হলে হেলানো কোণের পরিমাণ = উক্ত স্থানের অক্ষাংশের (Latitude) মান (ডিগ্রিতে)
শীতকালে সর্বোচ্চ শক্তি পেতে হলে হেলানো কোণের পরিমাণ = উক্ত স্থানের অক্ষাংশের (Latitude) মান (ডিগ্রিতে) + ২০°।
(গ) প্যানেলের উপর ছায়া/আলোর প্রতিবন্ধকতাঃ

কোন অবস্থাতেই যাতে প্যানেলের উপর ছায়া না পড়ে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। ছায়া পড়লে বা আলোর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে প্যানেল পূর্ণ দক্ষতায় কাজ করতে পারে না। অর্থাৎ “প্যানেলের বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যায়”।
(ঘ) প্যানেল ও ব্যাটারির দূরত্বঃ

প্যানেল ও ব্যাটারির মধ্যকার দূরত্ব যথাসম্ভব কম রাখা উচিত। কোন অবস্থাতেই ৩০ ফুটের বেশি হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। ২০-২৫ ফুটের মধ্যে থাকাই ভালো। কারণ এ বিদ্যুৎ স্বল্প ক্ষমতাসম্পন্ন এবং বিদ্যুতের পরিমাণও খুব অল্প। তাই ব্যাটারি ও প্যানেলের দূরত্ব যত বেশি হবে পরিবাহী রেজিস্ট্যান্স ও ভোল্টেজ ড্রপ তত বেশি হবে, অর্থাৎ বিদ্যুতের অপচয় ঘটবে। ফলে সিস্টেমের কর্ম দক্ষতা কমে যাবে।

 

গুগল নিউজ
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

চার্জ কন্ট্রোলার স্থাপন :
১। চার্জকন্ট্রোলারকে এমনভাবে স্থাপন করতে হবে, যাতে ব্যাটারিকে এর নিকটবর্তী স্থানে নিরাপদে স্থাপন করা যায় এবং সংকেতসমূহ দেখা যায়।
২। কোনো অবস্থাতেই চার্জ কন্ট্রোলার স্যাঁতসেঁতে জায়গায় লাগানো যাবে না। চার্জ কন্ট্রোলারের কুগুলো টাইট দিয়ে পরখ করতে হব যাতে করে কোনো তার বা কানেকশন ঢিলা না থাকে

৩। চার্জ কন্ট্রোলারের প্রতিটি ফাংশন যেমন- কম ভোল্টেজ সংযোগ ও বিচ্ছিন্নকরণ, বেশি ভোল্টেজ বিচ্ছিন্নকরণ ও সংযোগ, সেট পয়েন্ট ইত্যাদি ঠিক আছে কি না তা পরখ করতে হবে।
ব্যাটারি স্থাপনঃ
ব্যাটারিকে চার্জ কন্ট্রোলারের নিকটবর্তী নিরাপদ স্থানে স্থাপন করতে হবে। চার্জ কন্ট্রোলার থেকে ব্যাটারির দূরত্ব ৩-৫ ফুটের মধ্যে থাকা উচিত। ব্যাটারি স্থাপনের জায়গাটি যেন বায়ু সঞ্চালনের ব্যবস্থা থাকে।

ব্যাটারি স্থাপনের পূর্বে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো উপর লক্ষ রাখতে হবে :
১। ব্যাটারি সবসময় সোজাভাবে সমান জায়গায় শুকনো কাঠের উপর রাখতে হবে।
২। ইনসুলেটেড যন্ত্রপাতি ছাড়া ব্যাটারির কাজ করা যাবে না।
৩। ব্যাটারি যেখানে রাখা হবে, সেই জায়গায় অবশ্যই বাতাস চলাচলের সুবিধা থাকতে হবে।

 

 

বাতি স্থাপনঃ
বাতিগুলোকে এমন স্থানে স্থাপন করতে হবে যাতে বাতির আলো ঘরের সব জায়গায় সমানভাবে পড়ে এবং ঘরের সৌন্দর্য পায়। বাতি স্থাপনের সময় আরো একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে চার্জ কন্ট্রোলার থেকে বাতির সুইচের দূরত্ব কোনক্রমেই  ৮-১০ মিটার বা ২০-২৫ ফুটের বেশি না হয়। সুইচ ও বাতি সকল সময় শিশুদের নাগালের বাইরে স্থাপন করতে হবে।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment