পাওয়ার, পাওয়ার ফ্যাক্টর, অ্যাকটিভ পাওয়ার ও রিয়্যাকটিভ পাওয়ারের সংজ্ঞা

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় পাওয়ার, পাওয়ার ফ্যাক্টর, অ্যাকটিভ পাওয়ার ও রিয়্যাকটিভ পাওয়ারের সংজ্ঞা

পাওয়ার, পাওয়ার ফ্যাক্টর, অ্যাকটিভ পাওয়ার ও রিয়্যাকটিভ পাওয়ারের সংজ্ঞা

পাওয়ার, পাওয়ার ফ্যাক্টর, অ্যাকটিভ পাওয়ার ও রিয়্যাকটিভ পাওয়ারের সংজ্ঞা

এরই মধ্যে আমরা জেনেছি DC সার্কিটে পাওয়ার হচ্ছে সার্কিটের সরবরাহ ভোল্টেজ ও সার্কিটে প্রবাহিত কারেন্টের গুণফলের সমান। অর্থাৎ PDc = VI (watt), কিন্তু এসি সার্কিটে পাওয়ার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এমটা হয় না। এসি সার্কিটে সার্কিট উপাদান (Parameter) হিসেবে রেজিস্ট্যান্স ছাড়াও ইন্ডাকট্যান্স ও ক্যাপাসিট্যান্স থাকে বলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভোল্টেজ ও কারেন্ট ভেক্টর একই ফেজে (Inphase) থাকে না।

অর্থাৎ ভোল্টেজ ও কারেন্টের মধ্যে একটি কৌণিক ব্যবধান থাকে, যাকে ফেজ পার্থক্য বা ফেজ কোণ বলে থাকি। ভোল্টেজ ও কারেন্টের এরূপ কৌণিক ব্যবধানের জন্য এসি সার্কিটে পাওয়ার সার্কিটের ভোল্টেজ ও কারেন্টের ভেক্টর গুণনের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

ধরা যাক কোন এসি সার্কিটের ভোল্টেজ ভেক্টর E Zo এবং কারেন্ট ভেক্টর। <B। তাহলে সার্কিটের ভোল্টেজ ও কারেন্টের কৌণিক ব্যবধান 6 = a-B.
অতএব, সার্কিট কর্তৃক গৃহীত পাওয়ার P = El cos(a-B)
বা, P = El cose

 

পাওয়ার, পাওয়ার ফ্যাক্টর, অ্যাকটিভ পাওয়ার ও রিয়্যাকটিভ পাওয়ারের সংজ্ঞা

 

এসি সার্কিটে পাওয়ারের সংজ্ঞা :

এসি সার্কিটের ভোল্টেজ, কারেন্ট ও সার্কিটের ফেজ কোণের কোসাইন মানের গুণফলকে পাওয়ার বলে।
এসি পাওয়ারকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যথা –

(ক) প্রকৃত পাওয়ার (Active power)

(খ) আপাত পাওয়ার (Apparent power)

(গ) রিয়্যাকটিভ পাওয়ার (Reactive power)

প্রকৃত পাওয়ার (Active power) :

সার্কিটে প্রকৃতই (Actual) যে পাওয়ার বা ক্ষমতা ব্যয়িত হয়, তাই প্রকৃত পাওয়ার বা Active power. এর প্রতীক P এবং একক ওয়াট বা কিলোওয়াট।
প্রকৃত পাওয়ার P = VI cose
উপরোক্ত ফর্মুলা হতে বলা যায়, এসি সার্কিটের ভোল্টেজ, কারেন্ট ও পাওয়ার ফ্যাক্টরের গুণফলই হল প্রকৃত পাওয়ার ।

আপাত পাওয়ার (Apparent power) :

এসি সার্কিটে ভোল্টেজ (V) এবং কারেন্ট (I) এর গুণফলকে আপাত পাওয়ার বলে ।

এর প্রতীক P, বা S, এর একক ভোল্ট অ্যাম্পিয়ার (VA) বা কিলো ভোল্ট অ্যাম্পিয়ার (kVA)।

 

আপাত পাওয়ার P বা S = VI. রিয়্যাকটিভ পাওয়ার (Reactive power) :

এসি সার্কিটে ভোল্টেজ (V), কারেন্ট (I) ও ফেজ কোণের সাইন মানের (Sine) গুণফলকে রিয়্যাকটিভ পাওয়ার বলে। এর প্রতীক P, বা 0 এবং এর একক ভার (VAR) বা কিলোভার (kVAR)।

‘রিয়্যাকটিভ পাওয়ার P, বা Q = VI sine,

রিয়্যাকটিভ পাওয়ার সার্কিটের কোন প্রয়োজনীয় কাজ সমাধা করে না। কারণ একটি পূর্ণ সাইকেলের প্রথম অর্ধসাইকেলে যে পাওয়ার গ্রহণ করে, পরবর্তী অর্ধ সাইকেলে সেই পাওয়ার আবার উৎসে ফিরে যায়, ফলে ইলেকটিভ পাওয়ার শূন্য।

ল্যাগিং ও লিডিং পাওয়ার ফ্যাক্টর :

এসি সার্কিটে কারেন্ট ভেক্টর ভোল্টেজ ভেক্টরের পিছনে অবস্থান করলে অর্থাৎ কেজ কোপ ল্যাগিং হলে সার্কিটের পাওয়ার ফ্যাক্টরকে ল্যাগিং পাওয়ার ফ্যাক্টর বলে। সার্কিট যদি ইন্ডাকটিভ হয় বা XL > c হয় সেক্ষেত্রে
সার্কিটে ল্যাগিং পাওয়ার ফ্যাক্টর সংঘটিত হয়।

আবার সার্কিটে কারেন্ট ভেক্টর, ভোল্টেজ ভেক্টরের সামনে অবস্থান করলে অর্থাৎ ফেজ কোণ লিডিং হলে সার্কিটের পাওয়ার ফ্যাক্টরকে লিডিং পাওয়ার ফ্যাক্টর বলে। সার্কিট যদি ক্যাপাসিটিভ হয় বা X X হয় সেক্ষেত্রে সার্কিটে লিডিং পাওয়ার ফ্যাক্টর সংঘটিত হয়।

পাওয়ার ত্রিভুজ :

 

পাওয়ার, পাওয়ার ফ্যাক্টর, অ্যাকটিভ পাওয়ার ও রিয়্যাকটিভ পাওয়ারের সংজ্ঞা

 

১০.২ নং চিত্রে পাওয়ার ত্রিভুজ দেখানো হয়েছে। এটি একটি সমকোণী ত্রিভুজ। সার্কিটের ফেজ কোণ হচ্ছে প্রকৃত পাওয়ার (P) এর আপাত পাওয়ার (P.) এর মধ্যবর্তী কোণের সমান। পাওয়ার ত্রিভুজে ভূমি বরাবর প্রকৃত পাওয়ার, লম্ব বরাবর রিয়্যাকটিভ পাওয়ার ও অতিভুজ বরাবর আপাত পাওয়ার নির্দেশিত হয়।

পাওয়ার ত্রিভুজের সংজ্ঞা :

কোন এসি সার্কিটের প্রকৃত পাওয়ারকে ভূমি, রিয়্যাকটিভ পাওয়ারকে লম্ব ও আপাত পাওয়ারকে অতিভুজ দ্বারা প্রকাশিত সমকোণী ত্রিভুজকে ঐ সার্কিটের পাওয়ার ত্রিভুজ বলে।

Leave a Comment