কার্শফের কারেন্ট এবং ভোল্টেজ সূত্রের বর্ণনা ও ব্যাখ্যা

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় কার্শফের কারেন্ট এবং ভোল্টেজ সূত্রের বর্ণনা ও ব্যাখ্যা

কার্শফের কারেন্ট এবং ভোল্টেজ সূত্রের বর্ণনা ও ব্যাখ্যা

কার্শফের কারেন্ট এবং ভোল্টেজ সূত্রের বর্ণনা ও ব্যাখ্যা

বহু ধরনের সার্কিট আছে, যাদের বিভিন্ন উপাদান না সিরিজ, না প্যারালাল বা না সিরিজ-প্যারালাল। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একটি সার্কিটের বিভিন্ন শাখায় দু’টি ভোল্টেজ-উৎস থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে সিরিজ এবং প্যারালালের কোন নিয়মনীতি বা ওমের সূত্রের প্রয়োগ সম্ভব নয়, বিশ্লেষণের আরো সাধারণ পদ্ধতির প্রয়োজন।

এ ধরনের সার্কিটকেই বলা হয় জটিল সার্কিট। এসব ক্ষেত্রেই কারশফের সূত্রের প্রয়োগ ছাড়া গত্যন্তর নেই।

কারেন্ট সূত্র বা প্রথম সূত্র (Current law or first law) :

“কোন বৈদ্যুতিক নেটওয়ার্কে এক বিন্দুতে মিলিত কারেন্টসমূহের বীজগাণিতিক যোগফল শূন্য হয়।” অথবা, “ কোন বৈদ্যুতিক নেটওয়ার্কের একটি সংযোগস্থলে আগত কারেন্টসমূহের বীজগাণিতিক যোগফল, ঐ সংযোগস্থল হতে নির্গত কারেন্টসমূহের বীজগাণিতিক যোগফলের সমান।”

 

চিত্রে পাঁচটি পরিবাহী তারকে একটি বিন্দুতে [O] সংযোগ করা হয়েছে। ধরা যাক, I1, I2, I3, I ও Is কারেন্ট উক্ত তার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। I ও I, কারেন্টসমূহ O সংযোগস্থল হতে নির্গত হচ্ছে এবং I2, I ও I, কারেন্টসমূহ O
সংযোগস্থলে আগমন করছে। সংযোগস্থলে আগত কারেন্টসমূহকে পজিটিভ এবং নির্গত কারেন্টসমূহকে
নেগেটিভ চিহ্ন দ্বারা সূচিত করলে, সূত্রানুযায়ী,

(- I) + b + (- b) + L + I5 = 0
বা, – I + b2 – I + Is + Is = 0
12+14+ Is=1, +13

অর্থাৎ, আগত কারেন্ট = নির্গত কারেন্ট

ভোল্টেজ সূত্র বা দ্বিতীয় সূত্র (Voltage law or second law) :

“কোন ঘেরা বা বন্ধ (Closed) বৈদ্যুতিক সার্কিটে সকল ই.এম.এফ. (E.M.F) এবং সকল ভোল্টেজ-ড্রপের বীজগাণিতিক যোগফল শূন্য হয়।”

 

 

উপরোক্ত বদ্ধ সার্কিটে (চিত্র ঃ ৩.২) তিনটি লুপ আছে, যথা- ABCFA, EDCFE এবং ABCDEFA কারশফের দ্বিতীয় সূত্র বা ভোল্টেজ সূত্র প্রয়োগ করে, আমরা তিনটি বদ্ধ লুপে তিনটি সমীকরণ পেতে পারি-
১। ABCFA লুপ-এ

E-I,R,-13R3 = 0

২। EDCFE লুপ-এ

E2-12R2-13R3₁ = 0

৩। ABCDEFA লুপ-এ

E-I,R,+I2R2-E2=0

সমাধান কৌশল (Solution Technique) :

সমস্যা সমাধানে যখন কারশফের সূত্র ব্যবহৃত হয়, তখন ধারাবাহিক কৌশল অবলম্বন অযথা শ্রম ও ভ্রান্তি লাঘব করতে সাহায্য করে। এ ব্যাপারে নিম্নলিখিত কার্যপ্রণালি যথেষ্ট সাহায্য করবে :

১। সার্কিটের একটি পরিচ্ছন্ন চিত্র আঁকতে হবে।

২। সকল সংযোগস্থল (Junction-point) অক্ষর দ্বারা চিহ্নিত করতে হবে, যাতে কারেন্ট পরিক্রমার বিভিন্ন পথ শনাক্ত করা যায়।

৩। ই.এম.এফ-এর উৎসগুলোর জ্ঞাত ভোল্টেজ এবং মেরু (Polarity) যথাযথ চিহ্ন দ্বারা নির্দেশ করতে হবে।

৪। সকল রেজিস্ট্যান্সের মান যথাস্থানে বসাতে হবে।

৫। কারেন্ট বিতরণের সবচেয়ে সম্ভাব্য দিক বা অভিমুখ, তীর-চিহ্ন দ্বারা নির্দেশ করতে হবে এবং সকল জ্ঞাত মান বসাতে হবে।

 

গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

৬। উপযুক্ত অক্ষর দ্বারা সার্কিটের অজ্ঞাত ধ্রুবকগুলো শনাক্ত করতে হবে (E2, R3. I, ইত্যাদি)। সংযোগস্থলে কারশফের কারেন্ট সূত্র প্রয়োগের বেলায় অজ্ঞাত ধ্রুবকের সংখ্যা যত কম রাখা যায়, ততই ভাল।

৭। কারশফের ভোল্টেজ সূত্র প্রয়োগকালে, কোন একটি সম্পূর্ণ পথ অনুসরণ করে ভোল্টেজের সমীকরণ লিখতে হবে। এভাবে যতগুলো অজানা ধ্রুবক আছে, এদের পথ চিহ্নিত করে সমীকরণ লিখতে হবে।

৮। ধারাবাহিকভাবে সমীকরণগুলোর সমাধান করতে হবে।

আরও দেখুন :

Leave a Comment