Site icon Electrical Gurukul [ ইলেকট্রিকাল গুরুকুল ] GOLN

আউটডোর সাবস্টেশনের বিভিন্ন উপাদান এবং তাদের কাজ

আউটডোর সাবস্টেশনের বিভিন্ন উপাদান এবং তাদের কাজ

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় – আউটডোর সাবস্টেশনের বিভিন্ন উপাদান এবং তাদের কাজ ।যা “ সাবস্টেশনের ব্যবহার এবং কার্যক্রম” অধ্যায় এর অন্তর্ভুক্ত।

আউটডোর সাবস্টেশনের বিভিন্ন উপাদান এবং তাদের কাজ 

 

 

সাবস্টেশনের সরঞ্জামসমূহ : সাবস্টেশনের ধরন, পরিচালনা, কার্যক্ষমতা এবং আরক্ষ ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি ও সাজ-সরঞ্জামাদি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন-

(১) ওয়েভ ট্রাপ : এটি ক্যারিয়ার সরঞ্জামের অন্যতম একটি অংশ। এর সাহায্যে ট্রান্সমিশন লাইনের ওয়েভকে আটক করা হয় এবং পরবর্তীতে এ ওয়েভকে শব্দ শক্তিতে রূপান্তর করা হয়। এক সাবস্টেশন হতে অন্য সাবস্টেশনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য খুবই সহায়ক। 

(২) বাসবার : বাসবারের বহুল প্রচলিত সাইজগুলো নিম্নরূপ-

এটি অ্যালুমিনিয়াম বা কপারের তৈরি আয়তাকার দণ্ড বিশেষ। তবে এ আকৃতি বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন- অ্যাঙ্গেল বার, গোলাকার পাইপ বা গোলাকার সলিড দত্ত ইত্যাদি। অ্যাঙ্গেল বাসবার সর্বদা স্থির ভোল্টেজে (Constant Voltage) কাজ করে থাকে। সাবস্টেশনের ইনকামিং ও আউটগোয়িং লাইন বা ফিডারসমূহ বাসবারের সাথে সংযুক্ত থাকে।

40 x 4 mm² (160 mm²), 40 x 5 mm². (200 mm²), 50 x 5 mm². (250 mm².) 50 × 6 mm². (300 mm².), 60 x 8 mm². (480 mm2.), 80, 8 mm². (640 mm²), 100 x 10 mm². (1000 m².)

বাসবারের দৈর্ঘ্য 5 থেকে 6 মিটার হয়ে থাকে। বা, (5 থেকে 8 মিটার)

(৩) লাইটনিং অ্যারেস্টারঃ সাবস্টেশনের বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ও সাজ-সরঞ্জামগুলোকে পাইটনিং সার্চ বা ওভার ডোস্টেজজনিত ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য লাইটনিং অ্যারেস্টার ব্যবহৃত হয়।

(৪) আইসোলেটরঃএটিকে অনেক সময় ডিসকানেক্টিং সুইচত বলে। সার্কিটকে ব্রেকার দিয়ে লোড বিচ্ছিন্ন করার পর সাবস্টেশনে ব্যবহৃত বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট বা বৈদ্যুতিক মেশিন এবং পাওয়ার সার্কিটের অংশবিশেষ খোলার জন্য আইসোলেটর ব্যবহৃত হয়। এতে রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ অধিক নিরাপত্তা এবং নিশ্চিন্তভাবে কাজ করতে পারে।

(৫) সার্কিট ব্রেকারঃ সাবস্টেশনে সার্কিট ব্রেকার নিম্নলিখিত কার্য সম্পাদনের জন্য স্থাপন করা হয়-

(ক) নির্বিঘ্নে অবিরত ফুল লোড কারেন্ট বহন করা।

(খ) অল্প লোড অবস্থার সার্কিট খোলা এবং বন্ধ করা।

(গ) নরমাল অপারেটিং কারেন্টে মেক (Make) এবং ব্রেক (Break) করা।

(ঘ) ডিজাইনকৃত শর্টসার্কিট কারেন্টে মেক এবং ব্রেক করা (To Make and Break the Circuit Current of Magnitude upto which is Desgined for) ! 

 

 

(৬) বাস কাপলারঃডুপলিকেট বাসবার ব্যবস্থাপনায় দুটি বাসবার থাকে। একটি প্রধান বাসবার এবং অপরটিকে সাহায্যকারী (অক্সিলিয়ারি) বাসবার বলে। প্রধান বাসবার হতে লোড অক্সিলিয়ারি বাসবারে স্থানান্তর করার জন্য বাস কাপলার ব্যবহৃত হয়।

(৭) ইনট্রুমেন্ট ট্রান্সফর্মার : এটি দুই প্রকার, যথা-

(ক) কারেন্ট ট্রান্সফরমার বা সিটি (Current Transformer)। 

(খ) পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার বা পিটি (Potential Transformer)।

(ক) সিটি : হাই ভোল্টেজ লাইনের উচ্চ মানের কারেন্টকে আনুপাতিক হারে কমিয়ে নিম্নমানের বা লো বেঞ্জের অ্যামিটার, ওয়াট মিটারের পরিমাপের কাজে এবং রিলে সংযোগের জন্য সিটি ব্যবহৃত হয়। 

(খ) পিটি : হাই ভোল্টেজকে আনুপাতিক হারে কমিয়ে লো রেঞ্জের ভোল্টমিটার, ওয়াটমিটার দিয়ে পরিমাপের কাজ করা হয়। এছাড়া রিলে সংযোগেও এটি ব্যবহৃত হয়।

(৮) পাওয়ার ট্রান্সফরমার : সাবস্টেশনে ব্যবহৃত পাওয়ার ট্রান্সফরমার স্টেপ-আপ (Step-up) আকৃতির হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ভোল্টেজকে কাঙ্ক্ষিত মানে হ্রাস-বৃদ্ধি করাই প্রধান কাজ। তাছাড়া ভোল্টেজ রেগুলেটিং-এর উদ্দেশ্যে অন লোড ট্যাপ চেঞ্জিং ব্যবস্থাসহ ট্রান্সফরমার ব্যবহৃত হয়।

(৯) ইন্ডিকেটিং এবং মিটারিং ইনট্রুমেন্টঃ সাবস্টেশনের বিভিন্ন সার্কিটে এবং পাওয়ার লোডের কারেন্ট প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রকার ইন্ডিকেটিং ইনস্ট্রুমেন্ট, যেমন- অ্যামিটার, ভোল্টমিটার, ওয়াটমিটার,কিলোওয়াট আওয়ার মিটার (kWh Meter) ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। এছাড়া রেকর্ডিং ইনট্রুমেন্টও ব্যবহৃত হয়।

(১০) ইনসুলেটর : এটি সাধারণত চীনামাটির (Porcelin) তৈরি হয়ে থাকে। সাবস্টেশনে পোস্ট টাইপ, বুশিং টাইপ এবং সাসপেনশন টাইপ ইনসুলেটর ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ইনসুলেটর দুটি কাজে ব্যবহার করা হয়। প্রথমত, এটি লাইভ কন্ডাক্টর (Live Conductor) এবং বাসবার ধারণের জনা সাপোর্ট হিসেবে কাজ করে। দ্বিতীয়ত, লাইভ কন্ডাক্টর ও বাসবার আর্থ থেকে ইনসুলেট ধরে রাখে।

(১১) ফিউজ : সাবস্টেশনে হাই ভোল্টেজ সার্কিটে অন্যান্য প্রোটেক্টিভ ডিভাইস-এর সাথে ড্রপ আউট ফিউজ, কার্টিজ ফিউজ এবং এক্সপালশন ফিউজ ব্যবহার করা হয়।

(১২) রিলে : পাওয়ার সিস্টেমে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিগুলোকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে অন্যান্য প্রোটেক্টিভ ডিভাইসসমূহের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখে।

(১৩) ডিসি সাপ্লাই ইউনিটঃ রিলে সার্কিট এবং সাবস্টেশনের সম্পূর্ণ এসি সরবরাহ বিঘ্নিত হলে জরুরি অবস্থার প্রয়োজন মিটানোর জন্য সাবস্টেশনে ব্যাটারি সেট-এর ব্যবস্থা থাকে।

(১৪) প্যানেল বোর্ড : এটি শিট মেটাল দিয়ে তৈরিকৃত বোর্ড। সাবস্টেশনে ব্যবহৃত ডিভাইস ও যন্ত্রপাতিসমূহকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এবং কন্ট্রোল রুম থেকে নিয়ন্ত্রণের জন্য এ বোর্ডে বিভিন্ন প্রকার মিটারসমূহ, যেমন- ভোল্টমিটার, পাওয়ার ফ্যাক্টরমিটার স্থাপন করা থাকে।

(১৫) কন্ট্রোল ডেস্ক : সাবস্টেশনের বিভিন্ন অংশ, যেমন- শুধুমাত্র, ট্রান্সফর্মারকে আলাদাভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য কন্ট্রোল ডেস্ক ব্যবহার করা হয়। এটি প্রধান বোর্ডের সামনে আলাদাভাবে থাকে।

(১৬) আর্থিং সুইচ : সার্কিট ব্রেকার বা ফিউজ দিয়ে উচ্চ ভোল্টেজ লাইন বা এটির অংশবিশেষ হঠাৎ বিচ্ছিন্ন করা হলে, লাইন কন্ডাক্টর উচ্চ ভোল্টেজে চার্জিত হয়ে থাকে। কাজেই আর্থিং সুইচ এর মাধ্যমে উচ্চ ভোল্টেজকে আর্থে ডিসচার্জ করা হয়। এতে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ নিরাপদে করা যায়। 

(১৭) ওয়ার্কশপ : ওয়ার্কশপে সাবস্টেশনের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও ইকুইপমেন্ট মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কার্য সম্পন্ন করা হয়।

(১৮) ক্যারিয়ার কারেন্ট ইকুইপমেন্ট : বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত জেনারেটিং স্টেশন, সাবস্টেশন-এর মধ্যে জরুরি যোগাযোগ, বার্তা প্রেরণ এবং কার্যসম্পাদন তদারকির উদ্দেশ্যে এ ইকুইপমেন্টগুলো পাওয়ার সার্কিটের সাথে সংযুক্ত থাকে। কিন্তু এগুলো ক্যারিয়ার কক্ষে স্থাপন করা হয়।

(১৯) কন্ট্রোল রুম : সুইচ বোর্ড, প্যানেল বোর্ড, কন্ট্রোল বোর্ড, ক্যারিয়ার কারেন্ট ইকুইপমেন্ট এবং ব্যাটারি সাবস্টেশনের একটি কক্ষে স্থাপন করা হয় এটিকে কন্ট্রোল রুম বলে। 

 

 

(২০) কন্ট্রোল ক্যাবল : স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য কন্ট্রোল ক্যাবল এবং কন্ডুইট সিস্টেম প্রয়োজন হয়। সাধারণত কন্ট্রোল সিস্টেম 110 ভোল্ট বা 220 ভোল্টে কাজ করে এবং এর জন্য মাল্টিকোর ক্যাবল, যেমন- 10 বা 37 বা 61 কন্ডাক্টর বিশিষ্ট ক্যাবল ব্যবহৃত হয়। 

(২১) অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র : যেকোনো বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনাজনিত কারণে আগুন লাগলে তা নিভানোর জন্য Fire Extinguisher, বালু এবং পানি ইত্যাদি অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং উপকরণসমূহ সাবস্টেশনের মজুদ রাখা হয়। 

আরও দেখুনঃ

Exit mobile version