কারশফের সূত্রের সত্যতা নিরূপণ

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় কারশফের সূত্রের সত্যতা নিরূপণ

কারশফের সূত্রের সত্যতা নিরূপণ

ভূমিকা :

ইলেকট্রিক্যাল এনার্জির সোর্স, রেজিস্ট্যান্স এবং অন্যান্য সার্কিট উপাদানের যে কোনরূপ সমাহারকেই ইলেকট্রিক্যাল নেটওয়ার্ক বলে। সাধারণত একটি উৎস বিশিষ্ট সার্কিটের কারেন্টের মান ওহমের সূত্রের সাহায্যে নির্ণয় করা হয়, কিন্তু যেখানে একের অধিক উৎস থাকে সে সকল জায়গায় ওহমের সূত্র প্রয়োগ করা সম্ভব নয়।

এরূপ জায়গায় যে সকল পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে কারশফের সূত্র একটি। জার্মানির পদার্থবিদ গুস্টাফ কার্শফের দুটি সূত্রের একটিকে বলে কারশফের কারেন্টের সূত্র (Kirchhoff’s Current Law, সংক্ষেপে KCL) এবং অপরটি হচ্ছে কারশফের ভোল্টেজ সূত্র (Kirchhoff’s Voltage Law, সংক্ষেপে KVL)। ইলেকট্রিক্যাল নেটওয়ার্কের কোন শাখার কারেন্ট নির্ধারণে এ সূত্রের ব্যাপক ব্যবহার প্রচলিত রয়েছে ।

উদ্দেশ্য :

১। কারশফের কারেন্ট সূত্র পর্যবেক্ষণ;

২। একাধিক উৎস বিশিষ্ট ইলেকট্রিক্যাল নেটওয়ার্কে কারশফের ভোল্টেজ সূত্র পর্যবেক্ষণ ।

তত্ত্ব :

কারশফের ১ম সূত্র বা কারশফ’স কারেন্ট ‘ল’ :

একটি ইলেকট্রিক্যাল নেটওয়ার্কের কোন জাংশন বিন্দুতে মোট আগত কারেন্টসমূহের যোগফল হবে মোট নির্গত কারেন্টের যোগফলের সমান। অন্যভাবে বলা যায় যে, একটি নেটওয়ার্কের কোন জাংশন বিন্দুতে মিলিত কারেন্টসমূহের বীজগাণিতিক যোগফল হচ্ছে শূন্য। অর্থাৎ lincoming = [loutgoing

কারশফের ২য় সূত্র বা কার্শফ’স ভোল্টেজ ‘ল’ :

একটি নেটওয়ার্কের কোন বদ্ধ লুপে সকল ইএমএফ এবং ভোল্টেজ ড্রপের বীজগাণিতিক যোগফল হচ্ছে শূন্য, অর্থাৎ Lo = Lo IR, যেখানে L হচ্ছে যোগফলের চিহ্ন, E = EMF, IR = Voltage drop, 0 = Closed path । সূত্রটিকে সংক্ষেপে লেখা যায় যে, একটি বদ্ধ লুপে পটেনশিয়ালের বৃদ্ধি এবং ড্রপ-এর যোগফল হচ্ছে শূন্য।

প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও মালামাল :

১। পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট (PSU), 0–32 Volt, 3.2 Ampere -১টি

২। ১নং ব্যবহৃত না হলে Dry cell, D D Size, 1.5 Volt -৪টি

৩। ২নং ব্যবহৃত হলে উপযুক্ত ব্যাটারি কেস – ১টি

8। Multimeter – ১টি

৫। Circuit & Network experiment বোর্ড (মোট ৩টি সিরামিক রেজিস্ট্যান্স বিশিষ্ট 4752, 10052, 15052 প্রতিটি 5W/10W) – ১টি

৬। ক্রোকোডাইল ক্লিপসহ জাম্পার/তার – ১০টি

সার্কিট ডায়াগ্রাম :

 

কারশফের সূত্রের সত্যতা নিরূপণ

 

কাজের ধাপ :

১। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও মালামাল সংগ্রহ করার পর KCL পরীক্ষার জন্যে চিত্রানুযায়ী উৎসের এবং মিটারের পোলারিটি লক্ষ রেখে সার্কিট ডায়াগ্রাম অনুযায়ী সার্কিট/নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। (চিত্র- (a)]

২। পরীক্ষার সুবিধার জন্যে একটি জাংশন বিন্দু স্থির করতে হবে। (A বিন্দু)

৩। জাংশন বিন্দুতে আগত কারেন্ট এবং নির্গত কারেন্টের মান ডাটায় আলাদা আলাদা ভাবে বসাতে হবে।

8। আগত কারেন্টসমূহ এবং নির্গত কারেন্টসমূহের যোগফল একসাথে যোগ করে কারশফের কারেন্ট সূত্রের সত্যতা যাচাই করতে হবে।

 

গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

৫। উৎসের EMF-এর মান পরিবর্তন করে আবারও ৩ এবং ৪নং সমাধান করতে হবে।

৬। KVL প্রমাণ করার জন্যে উৎসের পোলারিটি দেখে সার্কিটটি তৈরি করতে হবে। (চিত্র-(b)]

৭। সার্কিটটি চালু থাকা অবস্থায় প্রতিটি উৎসের ইএমএফ এবং প্রতিটি লোডের ভোল্টেজ ড্রপ মেপে ডাটায় সন্নিবেশিত করতে হবে।

৮। মোট ইএমএফ (LE) এবং মোট ভোল্টেজ ড্রপ (IR) হিসেব করে কারশফের ভোল্টেজ সূত্র প্রমাণ করতে হবে।

৯। E এবং E2 এর মান পরিবর্তন করে আরেকবার ৭ এবং ৮নং সমাধান করতে হবে।

ডাটা শীট :

 

কারশফের সূত্রের সত্যতা নিরূপণ

 

সাবধানতা :

১। ইএমএফ সোর্স, অফ অবস্থায় সম্পূর্ণ সার্কিটটি সাজাতে হবে।

২। যথাস্থানে মিটার বসাতে হবে।

৩। যথাসম্ভব কম সময় অথচ সঠিক পাঠ নেয়ার চেষ্টা করতে হবে।

৪। সঠিক মান পাওয়ার জন্যে একই মিটার বিভিন্ন অংশে ব্যবহার করা যেতে পারে।

৫। সেলগুলো যেন কখনই সরাসরি সংযুক্ত (শর্ট সার্কিট) না হয় তা লক্ষ রাখতে হবে।

উপসংহার : নিজে করি।

Work sheet :

ধরা যাক উপরের পরীক্ষাতেই ২০% ত্রুটি হয়েছে, সম্ভাব্য কারণ ও সমাধান লিখ ।

 

কারশফের সূত্রের সত্যতা নিরূপণ

 

আরও দেখুন : 

Leave a Comment